১৯৬৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একাধিক সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পাঠদানের মান, অর্জিত ফলাফল ও নিয়ম-শৃংখলার বিবেচনায় এ কলেজটি দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পাশাপাশি ডিগ্রী (পাস) সহ ১০ টি বিষয়ে অনার্স ও ৫ টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। এ সকল শাখা ও বিভাগসমূহে প্রায় ৬০০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নের সুযোগ পাচ্ছে।
২০১৫ সালে কলেজটি সম্পূর্ণ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আনা হয় যা একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন। বর্তমানে কলেজটি সম্পূর্ণ পাবলিক কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে, যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি। বর্তমানে নানামুখী অবকাঠামোগত উন্নয়ন কো-কারিকুলাম কার্যক্রম এবং উন্নত শৃংখলার পাশাপাশি লেখাপড়া ও কাঙ্খিত ফলাফল অর্জনে গ্রহণ করা হয়েছে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফল এবং অভিভাবকদের আস্থা অর্জনই আমাদের পথ চলার প্রেরণা।
বাংলাদেশে সেনাবাহিনী পরিচালিত ক্যান্টনমেন্ট কলেজগুলোর মধ্যে কোর্স কিংবা ছাত্রসংখ্যা সব ধরণের মানদন্ডেই সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। যশোর সেনানিবাসের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তে, শহরের আরবপুর রেলক্রসিং ও ডিএইওএস সংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত এই ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর দক্ষিণ বঙ্গের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর এর অধীনে, পরিচালনা পরিষদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত তথ্য:
◙ ১৯৬৯ সালে দাউদ পাবলিক স্কুলের ক্যাম্পাসে মানবিক বিভাগ চালুর মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু।
◙ ১৯৭৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়।
◙ ১৯৮৩ সালে দাউদ পাবলিক ক্যাম্পাস হতে বর্তমান ক্যাম্পাসে কলেজটি স্থানান্তরিত হয়।
◙ ১৯৮৫ সালে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।
◙ ১৯৯৩ সালে বি.এ, বি.এস.এস.এবং বি. কম (পাস) কোর্স চালু করা হয়।
◙ ১৯৯৫ সালে বিএসসি (পাস) কোর্স চালু করা হয়।
◙ ১৯৯৬ সালে বাংলা, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক স¤মান কোর্স চালু করা হয়।
◙ ১৯৯৯ সালে বাংলা, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হয়।
◙ ২০০৫ সালে হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, সমাজকর্ম, বিবিএ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামিক স্টাডিজ ও গণিত বিষয়ে অনার্স কোর্স খোলা হয়।
◙ ২০১৪ সালে হিসাব বিজ্ঞান, সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হয়।
◙ ২০১৭ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মটর ড্রাইভিং কাম মেকানিক ও কম্পিউটারে বেসিক কোর্স চালু করা হয়।
◙ বর্তমানে কলেজটিতে ২২ উচ্চ মাধ্যমিক, ১৮ ডিগ্রী (পাস), ১০টি বিষয়ে অনার্স ও ০৫টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে।
বিভিন্ন অর্জন সমূহ:
◙ ২০০২ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়।
◙ ২০০২, ২০০৩, ২০০৪ ও ২০১০ সালে পাবলিক কলেজসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়ে সেনা প্রধানের ট্রফি প্রাপ্তির গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১১ সালে ০১ জন ছাত্রের আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৫০০০ ও ১০০০০ মিঃ দূর পাল্লার দৌড়ে স্বর্ণপদক অর্জন করে ।
◙ ২০১৩ সালে বার্ষিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে একজন ক্যাডেট শ্রেষ্ঠ ফায়ারার নির্বাচিত হওয়ায় জিওসি মহোদয় কর্তৃক একটি ল্যাপটপ পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছে।
◙ ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে রসায়ন অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক লাভ করে।
◙ একই বছর জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ জ্ঞানে স্বর্ণপদক লাভ করে।
◙ ২০১৫ সালে প্রথম আলো আয়োজিত ‘ভাষা প্রতিযোগে’ জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক লাভ করে।
◙ ২০১৫ সালে ক্যান্টনমেন্ট কলেজসমূহের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে সংসদীয় বিতর্কে রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ জ্ঞানে স্বর্ণপদক লাভ করে।
◙ ২০১৫ সালে সশ্রস্ত্র বাহিনী দিবসে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় আমাদের শিক্ষার্থী প্রথম স্থান অর্জন করে।
◙ ২০১৫ সালে অত্র কলেজের বিবিএ বিভাগের একজন ছাত্রী পরিবেশ দূষণ রোধের উপর জাপানে অনুষ্ঠিত 20″ International Forum on Arsenic Contamination of Groundwater এর উপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করে ।
◙ ২০১৬ সালে আন্তঃক্যান্টনমেন্ট কলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৬ সালের বিজয় দিবস ক্রিকেট প্রতিযোগীতায় জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৭ সালের আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে এবং রুবিকিউবস প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করে।
◙ ২০১৭ সালের আঞ্চলিক পর্যায়ে রসায়ন অলিম্পিয়াডে ৩য় ও ১১তম স্থান এবং ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে ৯ম স্থান অর্জন করেছে।
◙ ২০১৭ সালে এ প্রতিষ্ঠানের বিএনসিসি (সেনা) শাখা হতে ০২ জন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলংকা ও ভারতে গমন করে, এছাড়া ২০১৬ সালে ০২ জন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলংকা ও ভারতে গমন করে, ২০১৫ সালে ০১ জন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলংকায় গমন করে, ২০১৪ সালে ০১ জন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলংকায় গমন করে, ২০১২ সালে ০১ জন শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলংকায় গমন করে এবং ২০১০ সালে ০১ জন শিক্ষার্থী মালদ্বীপ ও ভারতে গমন করে।
◙ ২০১৭ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-এর উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১৮টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে। জেলা পর্যায়ে ১৬টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে। বিভাগীয় পর্যায়ে ০৫টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে এবং জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে ১টি ছাত্র তাৎক্ষনিক অভিনয়ে ৩য় স্থান অধিকার করে।
◙ ২০১৭ সালের সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগীতায় অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ০৩ জন শিক্ষার্থী ১ম ও ০১ জন শিক্ষার্থী ২য় স্থান অধিকার করে। জেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে ০১ জন ১ম ও ০১ জন দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।
◙ ২০১৮ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে অত্র কলেজের বিএনসিসি সেনা শাখা উপজেলা, জেলা এবং খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ বিএনসিসি প্লাটুন এবং বিবিএনসিসি সেনা শাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক সহকারি অধ্যাপক এবং পিইউও মোঃ শরিফুল ইসলাম খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ বিএনসিসি শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হয়েছে।
◙ ২০১৮ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর; শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মেহেদী হাসান অনিক শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১৬টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে। জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগীতায় ১৩টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ০২টি ইভেন্টে ১ম স্থান অধিকার করে।
◙ ২০১৮ সালের আন্তঃক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল ও কলেজ এর ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অত্র কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ফুটবল, ভলিবল ও টিটি খেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৮ সালের আন্তঃক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল ও কলেজ এর বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অত্র কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা খুলনা অঞ্চলে প্রথম স্থান অধিকার করে এবং সারা দেশের মধ্যে রানাআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৮ তে শত বর্ষ রোভারিং উপলক্ষে সাইকেল রেলিতে অত্র কলেজের ৪ জন রোভার অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছে।
◙ ২০১৮ ও ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে খুলনা বিভাগের মধ্যে বিএনসিসি সেনা শাখা শ্রেষ্ঠ প্লাটুন এবং বিএনসিসি’র শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়।
◙ ২০১৮ তে শত বর্ষ রোভার মুড রোভার পল্লী, গাজীপুরে অংশগ্রহণ করে অত্র কলেজের রোভার ইউনিট সেরাদের সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ র্যাংকিং খুলনা অঞ্চলের মধ্যে ৫ম এবং ২০১৬ সালে ৭ম হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
◙ ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে খুলনা বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ার গৌরব অর্জন করে।